আমার দৃষ্টিকোণ
আমি যদি কখনো বলতে চাই যে আমি কারোর সাথে বড় হয়েছি, তাহোলে আমার এই খালাতো বোনের কথা বলতে হয়। আমাদের বয়সের পার্থক্য মাত্র দু বছর (ও বড়), এবং খুব ছোটবেলায় আমরা কয়েক বছর একসাথে কাটিয়েছি। বাংলাদেশের অনেকটাই আমি দেখি ওর চোখ দিয়ে। আমাদের বরাবর অনেক ঘনিষ্টতা: আমরা দুজনেই পরিবারে বড় সন্তান, সবকিছু অন্য সবার আগে করে এসেছি।বড় হওয়ার পর একে-অন্যের গোপন কথা রক্ষা করে এসেছি। ও বরাবরই আধুনিক বাংলাদেশের সাথে আমার সংযোগ - যে বাংলাদেশের সাথে আমার মা-বাবা, বিশেষ করে আমার বাবা, কখনই আমাকে পরিচয় করিয়ে দিতে পারেনি।
ওকে আমার উভকামিতার কথা বলতে অনেক দিন লেগে যায় কারণ কিছু মানুষকে এটা সামনা-সামনি বলা দরকার, এবং ও ছিল তাদের একজন। আমি ওকে অবশেষে বলার সুযোগ পাই আমার ভার্সিটি শেষ হওয়ার পরের গ্রীষ্মের ছুটিতে। আমি অনেক আগেই বুঝি যে ওর LGBT মানুষের প্রতি বিশেষ কোন বিরুপতা নেই - এমনকি আমি প্রথম বাংলাদেশী LGBT মানুষের কথা শুনি ওরি কাছ থেকে। যেমন ওর স্কুলে নাকি একজন পুরুষালী লেজ্বিয়ান ছিল যার যৌনতা কারোর কাছে তেমন কোন বড় ব্যাপার ছিল না। আমি ওর কাছ থেকে যখন-তখন এই ধরনের এক দুই কথা শুনতাম, কিন্ত এই কথাগুলো ও যখনই বলত না কেন সেটা কোন ওর মুখে ঘৃন্না বা অপ্রীতি ছিল না। আমি বসে বসে এসব খুব মনোযোগ দিয়ে শুনতাম, কারণ তখন এ পৃথিবীটা আমার নাগালের বাইরে। কিন্ত কয়েক বছর পরে এসে আমার উভকামিতার কথা ওকে বলতে গিয়ে এসব উধারণ নিজেকে মনে করিয়ে সান্তনা দিতে কষ্ট হচ্ছিলো। অন্য একজন ক্লাসমেটের যৌনতা নিয়ে ওর সমস্যা না থাকলেও, নিজের ভাইয়ের ব্যাপারে কি ঠিক সে একই কথা প্রযোজ্য? কাছের মানুষ হোলে অনেক কিছুই মানতে কষ্ট হয়।