আমার নিজের উভকামিতা গ্রহণ করতে পারায় আমার মতে আমার জীবন আগের চেয়ে সম্পূর্ণ হয়ে উঠেছে। কিন্তু আমার এ পর্যায় পৌছাতে দীর্ঘ ৮ বছর সময় লেগেছে।
আমার নিজের যৌনতা কে স্বীকৃতি দেয়া আমি প্রথম শুরু করি ইংল্যাণ্ডে আসার পর। ইংল্যাণ্ডের হাই স্পিড ইন্টারনেট আবিষ্কার করার পর আমার মনে হতে থাকে পৃথিবীর সব তথ্যই যেন আমার হাতের মুঠোয়। আমি ইন্টারনেটের মধ্যমে আবারও ফরাসী শেখা শুরু করি, লিনাক্স নিয়ে গবেষণা করা শুরু করি। সময়ের সাথে আমি সমকামী অধিকার, সমতা এবং এ সব নিয়ে যে আলোচনা চলে ইন্টারনেটে তা খুঁজে পাই। সুস্থ, সাবলীল রোমান্টিক সমকামী সম্পর্কের কথা এ প্রথম আমি জানতে পারি। এ প্রথম আমার সামনে সমকামী সম্পর্ক ভাল হিশেবে কেউ তুলে ধরে।
আমার জীবনের অনান্য অংশ এ সময় ভালোই চলছিল। আমি এক সাথে আমার পড়াশোনা, বন্ধু-বান্ধব দের সাথে মেলামেশা করা এমন কি কয়েক ঘন্টার জন্য একটা ছোট-খাটো চাকরিও করছিলাম। আমার যৌনতা আমি তখনো গোপন করে রেখেছিলাম, কিন্তু এটা তখন পুরপরি অভ্যেস হয়ে গেছিলো। সব বাস্ততার মধ্যে আমি আমার যৌনতা নিয়ে খুব একটা চিন্তা ভাবনাও করতাম না। কিন্তু মাঝে মাঝে রাতে একা আমি ভাবতাম আমার জীবনে কি কি সম্ভব। চিন্তা করতাম আমি নিজের পায়ে দাড়ানোর পর সবাই কে ছেড়ে, চেনা-জানা মানুষেদের থেকে দুরে গিয়ে কোথাও আমার নিজের যৌনতা নিয়ে নিজের মতন থাকব নাকি। যদিও ইংল্যান্ডে আসার পর আমি অনেকের থেকে দুরে ছিলাম, আমার ইউনিভার্সিটি জীবনের নতুনতার কারণে এসব গবেষণা করাটা অতটা তখন দরকারী মনে হয়নি। তার অপর আমার এক্স-গার্লফ্রেন্ডের সাথে পরিচয় হওয়ার পর আমার উভকামিতা নিয়ে আম্মি চিন্তা ভাবনা আরও কম করা শুরু করি। আমার এক্স-গার্লফ্রেন্ডের সাথে আমার সম্পর্ক চলে ঠিক ভার্সিটির ফাইনাল ইআর পর্যন্ত। আমাদের সম্পর্ক শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমি তাকে আমার উভকামিতা লুকিয়ে রাখি, এবং এ নিয়ে আমি এখনো লজ্জিত।
তবে আমাদের সম্পর্ক চলাকালীন আমি মনে করেছিলাম যে আমি সারা জীবন আমার উভকামিতা লুকিয়ে রাখতে পারব। আমার নিজের কাছে যুক্তি ছিল যে যেহেতু আমি একজন মেয়ের সাথে এভাবে একটা পরিতৃপ্ত সম্পর্কে জড়াতে পেরেছি, তার মানে আমার ছেলেদের প্রতি আকর্ষণ নিয়ে আর চিন্তা করতে হবে না। কিন্তু আমাদের সম্পর্ক এক পর্যায় ভেঙ্গে যায়, এবং আমি একটা নতুন শহরে চলে যাই তিন মাসের ইন্টার্নশীপের জন্য। একা এই নতুন জাগায় আমি সময় পাই নিজেকে নিয়ে একটু চিন্তা-ভাবনা করার। আমি এরপর ফেরত যাই ইউনিভার্সিটিতে আমার নিজের উভকামিতার সাথে মুখোমুখি হবার সিধান্ত নিয়ে। কেউ যদি এখানে যৌনতার ইসলামী ব্যাখা বা অনুমোদন খুঁজে থাকেন, তাদের কাছে আমি দুক্ষ প্রকাশ করছি - এ পোস্টে আমি সেটা দিতে পারছি না। আমার নিজেকে গ্রহণ করাটা পুরোপুরি ধার্ক্মিক ব্যাপার ছিল না। এটা লিখে বোঝানো বেশ কঠিন ব্যাপার, তাও আবার বাংলায় লেখা আমার জন্য আরো কঠিন। আমি আমার মানসিক অবস্থা বিবেচনা করে বুঝি যে এত বড় একটা জিনিস এভাবে লুকিয়ে, চেপে রাখা মানসিক স্বাস্থের জন্য ভালো না। এত বছর ধরে আমার উভকামিতা নিয়ে বেচে থেকে আমি বুঝি যে এটা আমার মানুষ হিসেবে গঠনের একটি অংশ, এবং সময়ের সাথে এটা পাল্টাবে না। হ্যা, আমি ছেলদের প্রতি আমার আকর্ষণ লুকিয়ে শুধু মেয়েদের উপর মনোযোগ দিতে পারি, কিন্তু তাই বলে আমার ছেলেদের প্রতি আকর্ষণ চলে যাবে না। একই সাথে আমি এটাও এতদিন বুঝতে পারি যে আমার উভকামিতার কারণে যে আমি সবার মতন সামাজিক কর্তব্য পালন করতে পারব না তা না, এবং আমি যে অন্য কাউকে ক্ষতি করছি তাও না। আমি বেশ দৃঢ় ভাবে নিজেকে বলি যে আমার এই রখম হওয়াটা কোন খারাপ জিনিস না, এবং নিজেকে গ্রহণ করার সিধান্ত নিয়ার পর আমার জীবনটা মনে মনে অন্থত অনেকটা সহজ হয়ে ওঠে।
এই উপলব্ধির পর আমার অনেকটা মানসিক শান্তি আসে এবং দৈনন্দিন জীবন খানিকটা সহজ হয়ে ওঠে। এমনকি আমার মনে হয় আমি অনেক দিন পর আমার নিজের জীবন ঠিক মতন উপভোগ করতে পারছি, এবং আল্লাহর সাথে আমার সম্পর্ক আরো আন্তরিক হয়ে ওঠে আমার পক্ষ থেকে। আমি ধীরে ধীরে ইন্টার্নশীপএ দেখা হওয়া কিছু মানুষকে বলা শুরু করি যে আমি উভকামী। তারা কোন খারাপ প্রতিক্রিয়া না দেখানো তে আমার আত্মবিশ্বাস বারে। আমি আমার কাছের বন্ধুদের বলার পরিকল্পনা করি, বিশেষ করে যারা আমার মতে খবরটা খারাপ চোখে দেখবে না। আমি যৌনতার উপর ইসলামের বিভিন্ন মতামত খুঁজে বের করার চেষ্টা, ভালো ও খারাপ দুটোই যাতে আমি নিজে আমার ধার্মিক পরিস্থিতি মূল্যায়ন করতে পারি। মানুষজন হজরত লুতের কথা বলে অনেক, এবং আমি খুব একটা অবাক হয়েনি যে সমকামিতার প্রতি মানুষের খোব কতটা নিজেদের মতন অর্থ বের করে নেয়ার প্রতি নির্ভরশীল। আমি এর সাথে সমকামীতা সমর্থ করা অনেক তথ্যও খুঁজে পায়, এবং এসব আমার লিংক ও অনান্য তথ্য পেজ এ লিখে রাখা আছে। আমি ইউনিভার্সিটিতে একটা কাউন্সেলিং গ্রুপ খুঁজে বের করে সেটাতে যোগ দেই - আমার মতন আরো মানুষের সাথে যোগাযোগ করে তাদের অভিজ্ঞতা থেকে শেখার আহ্সায়।
সেই দিন থেকে আমার জীবন মোটামোটি ভালোই কাটছে। আমার বেশির ভাগ বন্ধু-বান্ধব এবং কিছু পরিবারের সদস্য জানে আমার উভমাকিতার ব্যাপারে। আমি এখন তাদের ব্যাপারে লিখতে চাই, এবং এটাই আমার শেষ এই ধরনের পোস্ট। জানি অনেক দেরিতে শেষ করলাম!
আমার জীবনের অনান্য অংশ এ সময় ভালোই চলছিল। আমি এক সাথে আমার পড়াশোনা, বন্ধু-বান্ধব দের সাথে মেলামেশা করা এমন কি কয়েক ঘন্টার জন্য একটা ছোট-খাটো চাকরিও করছিলাম। আমার যৌনতা আমি তখনো গোপন করে রেখেছিলাম, কিন্তু এটা তখন পুরপরি অভ্যেস হয়ে গেছিলো। সব বাস্ততার মধ্যে আমি আমার যৌনতা নিয়ে খুব একটা চিন্তা ভাবনাও করতাম না। কিন্তু মাঝে মাঝে রাতে একা আমি ভাবতাম আমার জীবনে কি কি সম্ভব। চিন্তা করতাম আমি নিজের পায়ে দাড়ানোর পর সবাই কে ছেড়ে, চেনা-জানা মানুষেদের থেকে দুরে গিয়ে কোথাও আমার নিজের যৌনতা নিয়ে নিজের মতন থাকব নাকি। যদিও ইংল্যান্ডে আসার পর আমি অনেকের থেকে দুরে ছিলাম, আমার ইউনিভার্সিটি জীবনের নতুনতার কারণে এসব গবেষণা করাটা অতটা তখন দরকারী মনে হয়নি। তার অপর আমার এক্স-গার্লফ্রেন্ডের সাথে পরিচয় হওয়ার পর আমার উভকামিতা নিয়ে আম্মি চিন্তা ভাবনা আরও কম করা শুরু করি। আমার এক্স-গার্লফ্রেন্ডের সাথে আমার সম্পর্ক চলে ঠিক ভার্সিটির ফাইনাল ইআর পর্যন্ত। আমাদের সম্পর্ক শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমি তাকে আমার উভকামিতা লুকিয়ে রাখি, এবং এ নিয়ে আমি এখনো লজ্জিত।
তবে আমাদের সম্পর্ক চলাকালীন আমি মনে করেছিলাম যে আমি সারা জীবন আমার উভকামিতা লুকিয়ে রাখতে পারব। আমার নিজের কাছে যুক্তি ছিল যে যেহেতু আমি একজন মেয়ের সাথে এভাবে একটা পরিতৃপ্ত সম্পর্কে জড়াতে পেরেছি, তার মানে আমার ছেলেদের প্রতি আকর্ষণ নিয়ে আর চিন্তা করতে হবে না। কিন্তু আমাদের সম্পর্ক এক পর্যায় ভেঙ্গে যায়, এবং আমি একটা নতুন শহরে চলে যাই তিন মাসের ইন্টার্নশীপের জন্য। একা এই নতুন জাগায় আমি সময় পাই নিজেকে নিয়ে একটু চিন্তা-ভাবনা করার। আমি এরপর ফেরত যাই ইউনিভার্সিটিতে আমার নিজের উভকামিতার সাথে মুখোমুখি হবার সিধান্ত নিয়ে। কেউ যদি এখানে যৌনতার ইসলামী ব্যাখা বা অনুমোদন খুঁজে থাকেন, তাদের কাছে আমি দুক্ষ প্রকাশ করছি - এ পোস্টে আমি সেটা দিতে পারছি না। আমার নিজেকে গ্রহণ করাটা পুরোপুরি ধার্ক্মিক ব্যাপার ছিল না। এটা লিখে বোঝানো বেশ কঠিন ব্যাপার, তাও আবার বাংলায় লেখা আমার জন্য আরো কঠিন। আমি আমার মানসিক অবস্থা বিবেচনা করে বুঝি যে এত বড় একটা জিনিস এভাবে লুকিয়ে, চেপে রাখা মানসিক স্বাস্থের জন্য ভালো না। এত বছর ধরে আমার উভকামিতা নিয়ে বেচে থেকে আমি বুঝি যে এটা আমার মানুষ হিসেবে গঠনের একটি অংশ, এবং সময়ের সাথে এটা পাল্টাবে না। হ্যা, আমি ছেলদের প্রতি আমার আকর্ষণ লুকিয়ে শুধু মেয়েদের উপর মনোযোগ দিতে পারি, কিন্তু তাই বলে আমার ছেলেদের প্রতি আকর্ষণ চলে যাবে না। একই সাথে আমি এটাও এতদিন বুঝতে পারি যে আমার উভকামিতার কারণে যে আমি সবার মতন সামাজিক কর্তব্য পালন করতে পারব না তা না, এবং আমি যে অন্য কাউকে ক্ষতি করছি তাও না। আমি বেশ দৃঢ় ভাবে নিজেকে বলি যে আমার এই রখম হওয়াটা কোন খারাপ জিনিস না, এবং নিজেকে গ্রহণ করার সিধান্ত নিয়ার পর আমার জীবনটা মনে মনে অন্থত অনেকটা সহজ হয়ে ওঠে।
এই উপলব্ধির পর আমার অনেকটা মানসিক শান্তি আসে এবং দৈনন্দিন জীবন খানিকটা সহজ হয়ে ওঠে। এমনকি আমার মনে হয় আমি অনেক দিন পর আমার নিজের জীবন ঠিক মতন উপভোগ করতে পারছি, এবং আল্লাহর সাথে আমার সম্পর্ক আরো আন্তরিক হয়ে ওঠে আমার পক্ষ থেকে। আমি ধীরে ধীরে ইন্টার্নশীপএ দেখা হওয়া কিছু মানুষকে বলা শুরু করি যে আমি উভকামী। তারা কোন খারাপ প্রতিক্রিয়া না দেখানো তে আমার আত্মবিশ্বাস বারে। আমি আমার কাছের বন্ধুদের বলার পরিকল্পনা করি, বিশেষ করে যারা আমার মতে খবরটা খারাপ চোখে দেখবে না। আমি যৌনতার উপর ইসলামের বিভিন্ন মতামত খুঁজে বের করার চেষ্টা, ভালো ও খারাপ দুটোই যাতে আমি নিজে আমার ধার্মিক পরিস্থিতি মূল্যায়ন করতে পারি। মানুষজন হজরত লুতের কথা বলে অনেক, এবং আমি খুব একটা অবাক হয়েনি যে সমকামিতার প্রতি মানুষের খোব কতটা নিজেদের মতন অর্থ বের করে নেয়ার প্রতি নির্ভরশীল। আমি এর সাথে সমকামীতা সমর্থ করা অনেক তথ্যও খুঁজে পায়, এবং এসব আমার লিংক ও অনান্য তথ্য পেজ এ লিখে রাখা আছে। আমি ইউনিভার্সিটিতে একটা কাউন্সেলিং গ্রুপ খুঁজে বের করে সেটাতে যোগ দেই - আমার মতন আরো মানুষের সাথে যোগাযোগ করে তাদের অভিজ্ঞতা থেকে শেখার আহ্সায়।
সেই দিন থেকে আমার জীবন মোটামোটি ভালোই কাটছে। আমার বেশির ভাগ বন্ধু-বান্ধব এবং কিছু পরিবারের সদস্য জানে আমার উভমাকিতার ব্যাপারে। আমি এখন তাদের ব্যাপারে লিখতে চাই, এবং এটাই আমার শেষ এই ধরনের পোস্ট। জানি অনেক দেরিতে শেষ করলাম!
No comments:
Post a Comment